By using this site, you agree to the Privacy Policy and Terms of Use.
Accept
Al-Mujaddid 24Al-Mujaddid 24
  • হোম
  • ইসলামিক শিক্ষা
  • ঈমান
  • ইবাদাত
  • শিরক
  • আকীদা
  • আখিরাত
  • ইতিহাস
  • ফিকহ
Search
Health
  • হোম
  • ইসলামিক শিক্ষা
  • ঈমান
  • ইবাদাত
  • শিরক
  • আকীদা
  • আখিরাত
  • ইতিহাস
  • ফিকহ
  • Contact
  • Blog
  • Complaint
  • Advertise
© ২০২৫ Al-Mujaddid 24 | সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
Reading: আত্মশুদ্ধির গুরুত্ব, তাৎপর্য ও প্রয়োজনীয়তা
Share
Sign In
Notification Show More
Font ResizerAa
Al-Mujaddid 24Al-Mujaddid 24
Font ResizerAa
Search
  • হোম
  • ইসলামিক শিক্ষা
  • ঈমান
  • ইবাদাত
  • শিরক
  • আকীদা
  • আখিরাত
  • ইতিহাস
  • ফিকহ
Have an existing account? Sign In
Follow US
  • Contact
  • Blog
  • Complaint
  • Advertise
© ২০২৫ Al-Mujaddid 24 | সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
Al-Mujaddid 24 > Blog > ঈমান > আত্মশুদ্ধির গুরুত্ব, তাৎপর্য ও প্রয়োজনীয়তা
ঈমান

আত্মশুদ্ধির গুরুত্ব, তাৎপর্য ও প্রয়োজনীয়তা

TafsirTree
Last updated: May 31, 2025 3:32 pm
TafsirTree
Share
SHARE

আত্মশুদ্ধির গুরুত্ব, তাৎপর্য ও প্রয়োজনীয়তা

ইসলামে আত্মশুদ্ধির গুরুত্ব অপরিসীম। সুস্থ দেহের ন্যায় সুস্থ্য আত্মার প্রয়োজনীতাও সমানরকম। বরং আত্মিক পরিশুদ্ধতা শারীরিক সুস্থতার চেয়েও বহুগুণ গুরুত্বপূর্ণ। ইহলৌকিক ও পরলৌকিক উভয় জাহানে সফল জীবন গঠনে আত্মশুদ্ধির কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমীনের বৈশিষ্ট্যই হলো আত্মাকে পরিশুদ্ধ রেখে দুনিয়া ও আখেরাতের সফলতা নিশ্চিত করা। আপন আত্মাকে যতবেশি পবিত্র, পরিচ্ছন্ন রাখা যাবে তত বেশি আল্লাহর নৈকট্য অর্জনে সহায়ক হবে। আত্মশুদ্ধির মাধ্যমে বান্দা সংযত মনোভাব অর্জন করে। গুনাহর পথে ধাবিত হৃদয়ের লাগাম টেনে সে নিজেকে আল্লাহর অবাধ্যতা থেকে রক্ষা করে। আল্লাহর সন্তুষ্টির পথে নিজেকে সম্পূর্ণরূপে বিলিয়ে দেয়। চলুন, আত্মশুদ্ধির গুরুত্ব ও তাৎপর্য সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক।

 

আত্মশুদ্ধি বা ‘তাযকিয়াতুন নফস’ কী?

শাব্দিক অর্থে, আরবী تزكية ক্রিয়ামূল হতে অর্থ পরিশুদ্ধ করা, পবিত্র করা। দর্শন ও আধ্যাত্মিক দৃষ্টিকোণ থেকে বলা হয়, বৈষয়িক চাহিদা ও কুপ্রবৃত্তি ত্যাগ করে অন্তরকে পরিশুদ্ধকরণ। পরিভাষায়, সকল প্রকার অশ্লীল, নিন্দনীয় ও কদর্য বিষয় থেকে অন্তরকে পবিত্র ও পরিচ্ছন্ন করা। মহান আল্লাহর বড়ত্ব স্বীকার করে নেক আমলের মাধ্যমে অন্তরকে সৌন্দর্য ও পূর্ণতা দানের চেষ্টাকে ‘তাযকিয়াতুন নফস’ বা আত্মশুদ্ধি বলে।

 

আত্মশুদ্ধির গুরুত্ব

আত্মশুদ্ধি বা তাযকিয়ার গুরুত্ব স্পষ্ট উপলদ্ধ হয় সুরা শামসে আল্লাহ তা‘য়ালা এগারোটি বিষয়ের কসম করে আত্মশুদ্ধির কথা উল্ল্যেখ করেছেন। মহামহিম আল্লাহ চন্দ্র, সূর্য, দিবস-রাত্রি, আসমান-জমিন প্রভৃতি গুরুত্বপূর্ণ বস্তুর কসম করে তাযকিয়াতুন নফস বা আত্মশুদ্ধির কথা ইরশাদ করেন। খোদ আল্লাহ তা‘য়ালা যে বিষয়ে কসম করেন তার গুরুত্ব সীমাহীন। এছাড়াও অত্যধিক গুরুত্ব প্রদানে আরবীতে ‘নিশ্চয়’ শব্দ ব্যবহার করেছেন। মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন-

‘কসম সূর্যের ও তার কিরণের; কসম চাঁদের যখন তা সূর্যের পর উদিত হয়। কসম দিনের, যখন তা সূর্যকে প্রকাশ করে। কসম রাতের, যখন তা সূর্যকে ঢেকে দেয়। শপথ আসমানের এবং যিনি তা বানিয়েছেন তাঁর। কসম যমীনের এবং যিনি তা বিছিয়ে দিয়েছেন। কসম মানুষের এবং যিনি তাকে সুঠাম বানিয়েছেন তাঁর। অতঃপর তাকে তার পাপ ও পূণ্যের জ্ঞান দান করেছেন। সেই সফলকাম যে ব্যক্তি নিজেকে পরিশুদ্ধ করেছে।’ (সুরা শামস: ১-৯)

 

আত্মশুদ্ধির প্রয়োজনীয়তা

আত্মশুদ্ধির মাধ্যমে মানুষ ধীরে ধীরে নিজেকে সফলতার পথে উন্নীত করতে পারে। বান্দার সাথে মহান প্রতিপালকের সম্পর্ক মজবুত করার মাধ্যম হলো ‘আত্মশুদ্ধি’। রবের নিকট নিজেকে যত বেশি সমর্পণ করা হয় তত বেশি কল্যাণপ্রাপ্ত হওয়া যায়। পার্থিব জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে একজন বান্দা মহান রবের আদেশ নিষেধকে অগ্রাধিকার দেবে এটাই স্বাভাবিক। রবের প্রতি যে যত বেশি প্রগাঢ় ভয় ও ভালবাসা লালন করে সে তত বেশি নিজেকে সংযত রাখতে সক্ষম হয়। পৃথিবীতে যুগে যুগে অসংখ্য নবী রাসূল আল্লাহ তা‘য়ালা প্রেরণ করেছেন স্বীয় জাতিকে সকল প্রকার পাপ-পঙ্কিলতা, অনাচার, কলুষতা ও অপকর্ম থেকে পরিশুদ্ধ করে আল্লাহর প্রদর্শিত পথে পরিচালিত করার মহান দায়িত্ব নিয়ে। প্রথমে জাতিকে কলুষমুক্ত করেছেন এরপর কিতাব ও হিকমত শিক্ষাদানের মাধ্যমে আত্মিক ও জ্ঞানগত উন্নতি সাধন করেছেন। ফলে আপনাতেই সেই জাতি হয়ে উঠেছে সভ্য, সুন্দর ও অনুকরণীয় একটি জাতি। পবিত্র কুরআনে বর্ণিত হচ্ছে-

ﱡﭐ هُوَ الَّذِي بَعَثَ فِي الْأُمِّيِّينَ رَسُولًا مِنْهُمْ يَتْلُو عَلَيْهِمْ آيَاتِهِ وَيُزَكِّيهِمْ وَيُعَلِّمُهُمُ الْكِتَابَ وَالْحِكْمَةَ وَإِنْ كَانُوا مِنْ قَبْلُ لَفِي ضَلَالٍ مُبِينٍ ﱠ

‘তিনি উম্মীদের (নিরক্ষর জাতির) প্রতি তাদের মধ্য হতেই একজনকে পাঠিয়েছেন রাসূলরূপে, যিনি তাদের নিকট আল্লাহর আয়াত পাঠ করেন, তাদেরকে পরিশুদ্ধ করেন এবং তাদেরকে কিতাব ও হিকমত শিক্ষা দেন অথচ ইতোপূর্বে তারা স্পষ্ট গোমরাহিতে নিমজ্জিত ছিল।’ (সুরা জুম‘আহ: ২)

 

মানব অন্তর দ্রুত পরিবর্তনশীল

‘নফস’ দ্রুত পরিবর্তনশীল। সময়ের সাথে মানুষের হৃদয়ের ধ্যান ধারণা ও বোধের পরিবর্তন আসে। মুহূর্তে স্বচ্ছ হৃদয়ে ভর করতে পারে কলুষতা। শয়তানী ওয়াসওয়াসায় হেরে যেতে পারে মুমীন হৃদয়। আবার পাপে ভরা হৃদয় মহান আল্লাহর ভয়ে ফিসে আসতে পারে চিরদিনের জন্য। এজন্যই অন্তরের পরিচর্যা প্রয়োজন। নবী সা. মানব হৃদয়ের বৈচিত্র্যতার ব্যাপারে ইরশাদ করেন-

لَقَلْبُ ابنِ آدمَ أَشَدُّ انْقِلابًا مِنَ القِدْرِ إذا اجتمعَتْ غَلْيًانًا.

‘আদম সন্তানের হৃদয় হাঁড়ির উঠলানো বা টগবগ করে ফোটা পানির চেয়েও অধিক পরিবর্তণশীল।’ (সিলাসিলাতুস সহীহাহ: ১৭৭২)

 

সফলতা ও ব্যর্থতার সোপান আত্মশুদ্ধি

যে ব্যক্তি নিজেকে পরিশুদ্ধ করে, আত্মাকে সকল প্রকার পাপ, পঙ্কিলতা ও আল্লাহর অবাধ্যতা থেকে মুক্ত রাখে সেই প্রকৃত অর্থে সফলকাম। অর্থাৎ আত্মশুদ্ধি আমাদের দুনিয়া ও পরকালীন জীবনে সফলতার কারণ। আত্মশুদ্ধির সাথে সফলতার যেমন সম্পর্ক তেমনি ব্যর্থতার সম্পর্কও রয়েছে। যে অন্তরকে কলুষিত ও অপবিত্র করবে সে নিজেকে ব্যর্থতার দিকে ঠেলে দেবে। মহান আল্লাহ এব্যাপারে ইরশাদ করেন-

قَدْ أَفْلَحَ مَنْ تَزَكَّىٰ ﱠ

‘নিশ্চয় সে সাফল্য লাভ করবে, যে নিজের আত্মাকে শুদ্ধ করবে।’ (সুরা আ’লা: ১৪)

বিপরীতে কলুষ হৃদয়ের ব্যাপারে মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন-

وَقَدْ خَابَ مَن دَسَّاهَا ﱠ

‘যে নিজের নফসকে কলুষিত করেছে সে তো ব্যর্থ হয়েছে।’ (সুরা শামস: ১০)

 

মহান আল্লাহ অন্তরের শুদ্ধতা দেখেন

মহান আল্লাহ প্রতেক্যের হৃদয়ের গহীনের খবর জানেন। তিনি সবকিছু সম্পর্কে সম্যক অবগত। এজন্য আমাদের আমল ও কর্ম বাহ্যিকভাবে সংঘটিত হলেও মহান আল্লাহ মানুষের হৃদয় দেখেন ও নিয়তের বিশুদ্ধতা দেখেন। বাহ্যিক আমল যত ভালো হোক, হৃদয়ের পরিশুদ্ধতা বা ইবাদত একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর জন্য না হলে তা গ্রহণীয় নয়। এ ব্যাপারে রাসূল সা. বলেন-

إِنَّ الله لا يَنْظُرُ إِلى أَجْسامِكْم، وَلا إِلى صُوَرِكُمْ، وَلَكِنْ يَنْظُرُ إِلَى قُلُوبِكُمْ وأشارَ بأَصبَعِه إلى صدرِه.

‘নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের শরীর ও আকার আকৃতি দেখেন না। বরং তিনি লক্ষ্য করেন তোমাদের হৃদয় এ কথা বলে তিনি আঙ্গুল দ্বারা নিজের বুক বা অন্তরের দিকে ইশারা করলেন।’ (মুসলিম: ২৫৬৪)

 

আত্মিক পরিশুদ্ধতা সকল শুদ্ধতার মূল

আমাদের ভালমন্দ কর্মের মূল উৎস হলো ‘নফস’ বা অন্তর। ভালো কিছুর প্রতি আকর্ষণ বা খারাপ বিষয়ের প্রতি আসক্তি প্রথমে অন্তরেই জাগ্রত হয়। তারপর মানুষ তা কর্মে পরিণত করে। অন্তর যদি পরিশুদ্ধ হয়, নেককাজের প্রতি আগ্রহ বৃদ্ধি পায়, বেশি বেশি সৎ আমল করা সম্ভব হয়। আর অন্তর কলুষিত হলে নানা কুমন্ত্রণা হৃদয়ে ভর করে। সবকিছুর মূলে রয়েছে অন্তর বা নফস। হাদীসেও বিষয়টি পরিষ্কার বর্ণনা করা হয়েছে। নবী সা. ইরশাদ করেন,

أَلاَ وَإِنَّ فِي الْجَسَدِ مُضْغَةً إِذَا صَلَحَتْ صَلَحَ الْجَسَدُ كُلُّهُ، وَإِذَا فَسَدَتْ فَسَدَ الْجَسَدُ كُلُّهُ‏.‏ أَلاَ وَهِيَ الْقَلْبُ.

‘শুনে রাখো, নিশ্চয় দেহে একটি গোশতের টুকরা রয়েছে, তা যখন ঠিক হয়ে যায় তখন গোটা শরীরই ঠিক হয়ে যায়। আর তা যখন নষ্ট (কলুষিত) হয়ে যায় তখন সমস্ত শরীর নষ্ট হয়ে যায়। জেনে রেখো, সেই গোশতের টুকরাটি হলো ক্বলব বা অন্তর।’ (বুখারী: ৫২

 

কুপ্রবৃত্তির অনুসরণ একটি আত্মিক ব্যাধী

কুপ্রবৃত্তি বলতে নফসের প্রবণতা, নিজের খেয়াল খুশী, কামনা বাসনা, রিপু ও কোনো খারাপ জিনিসের প্রতি টানকে বোঝায়। এর ফলে একজন ব্যক্তি ভ্রষ্টতার পথে পরিচালিত হয়। শরীয়তের নির্দেশ ও সুস্থ্য বিবেকের পরিপন্থী আনুগত্যই হলো কুপ্রবৃত্তির অনুসরণ। কুপ্রবৃত্তি অনুসরণের ফলে সবরকম পাপকর্ম একজন ব্যক্তির দ্বারা সংঘটিত হতে পারে। পবিত্র কুরআনের বহু জায়গায় প্রবৃত্তির অনুসরণ করতে নিষেধ করা হয়েছে। মহান আল্লাহ বলেন-

﴿ لا تَتَّبِعِ الْهَوَىٰ فَيُضِلَّكَ عَنْ سَبِيلِ اللَّهِ ۚ إِنَّ الَّذِينَ يَضِلُّونَ عَنْ سَبِيلِ اللَّهِ لَهُمْ عَذَابٌ شَدِيدٌ بِمَا نَسُوا يَوْمَ الْحِسَاب ٢٦ ﴾

‘আর প্রবৃত্তির অনুসরণ করো না, কেননা তা তোমাকে আল্লাহর পথ থেকে বিচ্যুত করবে। নিশ্চয় যারা আল্লাহর পথ থেকে বিচ্যুত হয় তাদের জন্য কঠিন আযাব রয়েছে। কারণ তারা হিসাব দিবসকে ভুলে গিয়েছিল।’ (সুরা সোয়াদ: ২৬)

 

অন্তরের সাথে ঈমানের সম্পর্ক

ঈমানের উৎস হলো হৃদয়। পরিশুদ্ধ হৃদয়েই লালিত হয় বিশুদ্ধ ঈমান। যদি উৎসস্থল তথা অন্তর সরল সোজা হয়ে যায়, ঈমানও সঠিক হয়ে যাবে। কলুষিত হৃদয় ঈমানের জন্য উপযুক্ত নয়। এজন্য নবী সা. ইরশাদ করেন,

لا يَسْتَقِيمُ إِيمَانُ عَبْدٍ حَتَّى يَسْتَقِيمَ قَلْبُه.

‘বান্দার অন্তর সঠিক ও সোজা না হওয়া পর্যন্ত তার ঈমান খাঁটি হবে না।’ (মুসনাদে আহমাদ: ১২৮৪৯)

 

কিয়ামতের দিন মিলবে নাজাত

আত্মশুদ্ধি মুক্তির অন্যতম পথ ও পন্থা। কিয়ামতের ভয়াবহ দিনে কোনো কিছু কাজে আসবে না। সবাই নিজ নিজ মুক্তির চিন্তায় বিভোর থাকবে সেদিন। আপন পিতামাতা, বন্ধুবান্ধব, আত্মীয় স্বজন, হিকাকাক্সক্ষীরাও পালিয়ে বেড়াবে একে অপর থেকে। সেই কঠিন মুহূর্তে শুধুমাত্র বিশুদ্ধ হৃদয়ের অধিকারীরা নিশ্চিন্তে থাকবে। যারা পরিশুদ্ধ ঈমান লালন করেছে ও সে অনুযায়ী আমল করেছে। মহান আল্লাহ বলেন,

﴿يَوۡمَ لَا يَنفَعُ مَالٞ وَلَا بَنُونَ ٨٨ إِلَّا مَنۡ أَتَى ٱللَّهَ بِقَلۡبٖ سَلِيمٖ ٨٩﴾

‘যেদিন ধন সম্পদ ও সন্তান সন্তুতি কোনো কাজে আসবে না। সেদিন উপকৃত হবে শুধু সে যে আল্লাহর নিকট বিশুদ্ধ অন্তর নিয়ে আসবে।’ (সুরা শু‘আরা: ৮৯-৯০)

 

নফসের প্রকার

প্রকৃতি ভেদে মানুষের অন্তরকে তিনভাগে ভাগ করা হয়েছে। কিছু অন্তর গুনাহ বা কু প্রবৃত্তির দিকে ঝুঁকে থাকে আবার কিছু অন্তর রবের সন্তুষ্টি কামনায় সদা তৎপর। নফসের তিনটি প্রকার হলো, ১. নফসে আম্মারা: যে অন্তর সর্বদা কুমন্ত্রণা, অশ্লীল ও অন্যায় কাজের প্রতি ধাবিত থাকে। ২. নফসে লাওয়ামা: অসৎ ও অন্যায় কাজের জন্য অনুতপ্ত মন। অর্থাৎ, দোটানা মন। ৩. নফসে মুতমায়িন্নাহ: বিশুদ্ধ বা প্রশান্ত চিত্তের মন।

 

পরিশুদ্ধ হৃদয়ের জন্য সুসংবাদ

পবিত্র কুরআনে মুমীনের হৃদয়কে ‘প্রশান্ত হৃদয়’ বা নফসে মুতমায়িন্নাহ বলে অভিহিত করা হয়েছে। অর্থাৎ, যে হৃদয় আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট ছিল, দুনিয়াতে রবের আদেশ নিষেধ যথাযথ পালন করেছে ফলে মহান আল্লাহ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন। পরকালে সে ব্যক্তি মহান রবের নৈকট্য ও নিরাপত্তা লাভ করবে। আল্লাহ তা‘য়ালা ইরশাদ করেন-

﴿ يَا أَيَّتُهَا النَّفْسُ الْمُطْمَئِنَّةُ ٢٧ ارْجِعِي إِلَىٰ رَبِّكِ رَاضِيَةً مَرْضِيَّةً ٨٩ فَادْخُلِي فِي عِبَادِي ٢٩ وَادْخُلِي جَنَّتِي ٣٠﴾

‘হে প্রশান্ত আত্মা (সেদিন পূণ্যবাণ ব্যক্তিকে বলা হবে), তুমি সন্তুষ্ট ও সন্তোষজনক হয়ে তোমার রবের নিকট ফিরে এসো, অতঃপর আমার (প্রিয়) বান্দাদের অন্তুর্ভুক্ত হও আর প্রবেশ করো আমার জান্নাতে।’ (সুরা ফজর: ২৭-৩০)

 

আত্মশুদ্ধির পথ ও পদ্ধতি

আত্মশুদ্ধি একটি দীর্ঘমেয়াদী অনুশীলনের বিষয়। জীবনভর এর অনুশীলন প্রয়োজন। ইসলামের বিভিন্ন উপলক্ষ্য ও আমলসমূহ আমাদের সংযমী মনোভাব তৈরি ও আত্মশুদ্ধি অর্জনে সহায়তা করে। ইসলামের মৌলিক বিধান যেমন, নামাজ, রোজা, হজ্ব, যাকাত ইত্যাদি বিধানগুলো আত্মশুদ্ধি অর্জনের জন্য সহায়ক। প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের মাধ্যমে একজন ব্যক্তি শৃঙ্খলা, নিয়মানুবর্তিতা ও মহান প্রভুর প্রতি নিজেকে আত্মসমর্পণ করার অনুশীলন করে। রোজার মাধ্যমে নিজেকে শারীরিক ও জৈবিক চাহিদা থেকে বিরত রাখার অনুশীলন করে। যাকাতের মাধ্যমে প্রিয় সম্পদ ইচ্ছার বিরুদ্ধ আল্লাহর পথে খরচ করে ত্যাগী মনোভাব অর্জনের সুযোগ লাভ করে। মোটকথা, ইসলামের মৌলিক ইবাদতগুলো আমাদের জন্য আত্মশুদ্ধি অর্জনের অনন্য সহায়ক। এজন্য ইসলামের মৌলিক বিধানাবলীর প্রতি আমাদের সর্বাগ্রে মনোযোগী হওয়া আবশ্যক ও একনিষ্ঠতার সাথে এগুলোর যথাযথ অনুশীলন প্রয়োজন। পাশাপাশি ইবাদতের অন্যান্য শাখায় ইখলাসের সাথে আমল করে যাওয়াও জরুরী।

মহান রবের প্রতিটি আদেশ নিষেধ যথাযথভাবে পালন করার মধ্যেই আত্মিক পরিশুদ্ধি নিহিত রয়েছে। খোদাভীতি বা তাকওয়া সর্বদা হৃদয়ে ধারণ করতে হবে। আত্মশুদ্ধির সরল পথ অবশ্যই ইসলামের নির্দেশিত কুরআন, সুন্নাহ ও সালফে সালেহীনের পথ। এর বাইরে অন্য কোনো পথ ও পন্থা থাকতে পারে না। আমাদেরকে ইসলামের মৌলিক বিধানগুলো মেনে চলতে হবে, হালাল হারাম বাছ বিচার করতে হবে। হারামভক্ষণকারীর কোনো ইবাদত মহান আল্লাহর নিকট গ্রহণীয় নয়। ফরজ ওয়াজিব সুন্নাহর পাশাপাশি নফল ইবাদতের প্রতিও গুরুত্বারোপ করতে হবে। আল্লাহর জিকির বা স্মরণ হৃদয়ে প্রশান্তি আনে। কুরআন কারীমের তেলাওয়াত মুমীনের ঈমানকে শাণিত করে। নবী সা. হৃদয়ের স্থিতিশীলতা ও ঈমানের উপর অবিচল থাকার জন্য দোয়া করেছেন এবং আমাদেরকেও শিক্ষা দিয়েছেন। সর্বোপরি, মহান আল্লাহর নিকট দোয়া করতে হবে তিনি যেন আমাদেরকে ঈমানের উপর অবিচল রাখেন। ঈমানের পথ ধরেই একজন ব্যক্তি জান্নাতের পথে এগিয়ে যেতে পারে। মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন-

﴿وَمَن يُؤۡمِنۢ بِٱللَّهِ يَهۡدِ قَلۡبَهُۥۚ وَٱللَّهُ بِكُلِّ شَيۡءٍ عَلِيمٞ ١١﴾

‘যে ব্যক্তি আল্লাহর প্রতি দৃঢ় ঈমান রাখে, আল্লাহ তার হৃদয়কে সৎপথে পরিচালিত করবেন।’ (সুরা তাগাবুন: ১১)

 

আত্মশুদ্ধি বা তাযকিয়াতুন নুফুস নিয়ে বিভ্রান্তি

একটি বিষয় লক্ষ্যণীয় যে, আত্মশুদ্ধি বা তাযকিয়া নফসের নামে অনেকে ব্যক্তিবিশেষের শরণাপন্ন হয়ে শরীয়ত বহির্ভূত কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েন। ঐ ব্যক্তিরাও অনুসারীদেরকে শরীয়া বহির্ভূত কর্মকাণ্ডে উদ্বুদ্ধ করে থাকে। তাছাউফ চর্চার নামে পীর, ফকির, লালন, সুফিবাদীদের একটি অংশ শরীয়ত, তরিক্বত, মাফেফত ও হাকিকত ইত্যাদি পরিভাষা ও এর মনগড়া ব্যাখ্যা তৈরি করেছে। প্রকৃতপক্ষে, তাজকিয়াতুন নফস বা ‘আত্মশুদ্ধি’ কুরআন সুন্নাহ বহির্ভূত কোন পথ বা তরিকা নয়। কুরআন সুন্নাহ ও সালাফদের পথ অনুসরণ করেই নিজেকে আত্মশুদ্ধির পথে এগিয়ে নিতে হয়। আত্মশুদ্ধি অর্জনের নামে শরীয়ত বহির্ভূত কোনো ব্যাপারে কেউ পরামর্শ বা তরিকা বাতলে দেয়ার নামে হারাম কাজের নির্দেশ করলে তা কখনোই মানা যাবে না। মহান আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের নির্দেশের বিপরীতে অন্য কারো আনুগত্য করা সম্পূর্ণ হারাম যা ঈমানের জন্য সমূহ ক্ষতির কারণ। তাযকিয়া বা আত্মশুদ্ধিকে কেন্দ্র করে সুফীবাদীদের মধ্যে অনেক ভ্রান্ত মতাদর্শ ও তরিকার উদ্ভব হয়েছে। বাংলাদেশেও অনেক ভণ্ডপীর আছে যারা সুস্পষ্ট শিরক, বিদআত ও শরীয়ত বহির্ভূত কর্মকাণ্ডে জড়িত। এদের বিষয়ে সতর্ক থাকা ঈমানী দায়িত্ব।

 

মহান আল্লাহ আমাদেরকে আত্মিক পরিশুদ্ধতা দান করুন। তাঁর সন্তুষ্টির জন্য আমাদের আমল ও প্রয়াসকে কবুল করুন। আমিন

You Might Also Like

ইসলামী নারীবাদ: উম্মে সালামা (রা.) প্রসঙ্গ ও কিছু কথা

পীর ধরা কি ফরজ?

Sign Up For Daily Newsletter

Be keep up! Get the latest breaking news delivered straight to your inbox.
[mc4wp_form]
By signing up, you agree to our Terms of Use and acknowledge the data practices in our Privacy Policy. You may unsubscribe at any time.
Share This Article
Facebook Copy Link Print
Share
Next Article পীর ধরা কি ফরজ?

Stay Connected

248.1kLike
69.1kFollow
134kPin
54.3kFollow
banner banner
Create an Amazing Newspaper
Discover thousands of options, easy to customize layouts, one-click to import demo and much more.
Learn More

নতুন ব্লগ পড়ুন

ইবাদত কবুলের শর্তাবলি
Uncategorized
তাওহীদের বাণীর শর্তগুলো জানা কি ফরয?
ইসলামিক শিক্ষা
নতুন প্রজন্মের জন্য ইসলাম বোঝার সহজপাঠ
ইসলামিক শিক্ষা
ঘরে-বাইরে ইসলাম: আধুনিক জীবনে সুন্নাহ চর্চার বাস্তব কৌশল
ইবাদাত
Al-Mujaddid 24Al-Mujaddid 24
Follow US
© ২০২৫ Al-Mujaddid 24 | সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
Welcome Back!

Sign in to your account

Username or Email Address
Password

Lost your password?

Not a member? Sign Up